ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ জুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যেই এক যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করেন। মারধরের আগে তাঁকে ভরপেট খাওয়ানোও হয় ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বহু মানুষ। ঢাকার ছ’জন পড়ুয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, শুধু ঢাকা নয়, গত দু’দিনে বাংলাদেশের জাহাঙ্গিরনগর এবং খাগড়াছড়িতে আরও দুই গণপিটুনির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। যার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বহু মানুষ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে নিহত যুবকের নাম তোফাজ্জল হোসেন (৩২)। তাঁর পরিবারের দাবি, যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়ার মোবাইল ফোন এবং মানিব্যাগ চুরি গিয়েছিল। রাতে যুবককে ঢুকতে দেখে তাঁকেই চোর বলে সন্দেহ করেন পড়ুয়ারা। এর পর তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে স্টাম্প, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ, এর পর মারধর থামিয়ে যুবককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে। সেখানে তাঁকে ভরপেট খাওয়ানো হয়। তার পর অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে আবার শুরু হয় মারধর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষকেরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। রাত ১২টার পর তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক পড়ুয়া। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার দিনভর ঢাকার বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ হয়েছে। প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিলেন পড়ুয়াদের একাংশ।
বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক প্রাক্তন সদস্যকে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পর আট পড়ুয়াকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করেছেন। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। ওই দিনই খাগড়াছড়ি এলাকায় মোটরসাইকেল চুরির সন্দেহে আরও এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। পর পর গণপিটুনির ঘটনায় প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের মানুষ। সমাজমাধ্যমের পাশাপাশি অনেকে রাস্তায় নেমেও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।